নাদিম হাসান:
শহরের খানপুর ৩শ’ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের ভিতরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মেডিকেল বর্জ্য। ব্যবহারের পর তা হাসপাতালের পেছন অংশে ফেলে স্তুপ করে রাখা হয়েছে। এখান থেকে কুকুর সহ বিভিন্ন প্রাণী টেনে নিয়ে নানা জায়গায় রাখছে। খোলা জায়গায় এসব বর্জ্য ছড়িয়ে থাকায় বিভিন্ন সংক্রামক রোগের ঝুঁকি রয়েছে বলে জানান সিভিল সার্জন। এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃক্ষের উদাসীনতায় ক্ষুব্দ সচেতন মানুষ।
সরেজমিন দেখা যায়, খানপুর সরকারি হাসপাতালে মেডিকেল বর্জ্যসহ গৃহস্থালি বর্জ্য হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে ইটের দেয়াল ঘেরা ফাঁকা উন্মুক্ত জায়গায় ফেলা হচ্ছে। এসব বর্জ্যরে ভেতরে রয়েছে সিরিঞ্জ, সুচ, রক্ত, পুঁজযুক্ত তুলা, টিউমার, ব্যান্ডেজের গজ, হ্যান্ডগ্ল্যাভস, ওষুধের শিশি, স্যালাইনব্যাগ ছাড়াও বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যে কোনো ময়লা-আবর্জনাই জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি স্বরূপ। আর তা মেডিক্যাল বর্জ্য হলে স্বাস্থ্যঝুঁকি আরো অনেক বেশি বেড়ে যায়। খোলা জায়গায় এসব বর্জ্য ফেলায় দিন দিন বাড়ছে যক্ষ্মা, চর্মরোগসহ নানা সংক্রামক রোগ। পাশাপাশি ডিপথেরিয়া, হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি এবং এইডসের ঝুঁকিও রয়েছে।
জানা যায়, ২০০৮ সালে রাজধানী ঢাকাসহ বাংলাদেশের অন্যান্য শহরে মেডিক্যাল বর্জ্য সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় হাসপাতাল বর্জ্য বিধিমালা তৈরি করে। বিধিমালায় উল্লেখ আছে গৃহস্থালির বর্জ্য ও মেডিক্যাল বর্জ্য আলাদা করে সুরক্ষিত জায়গায় ফেলতে হবে। এবং মেডিক্যাল বর্জ্য ধ্বংস করতে হবে। কিন্তু সরকারি উদ্যোগের অভাবে আজো বিধিমালাটি বাস্তব রূপ পায়নি।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, মেডিক্যাল বর্জ্য অবশ্যই স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর । তাই খোলা জায়গাতে এসব বর্জ্য ফেলা মোটেই উচিত নয়। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় থেকে হাসপাতাল বর্জ্য সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনার বিধিমালা দেয়া হয়েছে। তা মেনেই এসব বর্জ্য অপসারন করতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে খানপুরস্থ নারায়ণগঞ্জ ৩শ’ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবু জাহের কে ফোন করা হলে তার ব্যক্তিগত সহকারি (পি.এ) সোহেল বলেন, জায়গা না থাকায় আমাদের এভাবে বর্জ্য ফেলতে হয়। কিন্তু বর্জ্য অপসারনে ইতিমধ্যেই প্রিজম বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সাথে আমাদের চুক্তি হয়েছে। তিনি আরও জানান, নতুন ভবনের কাজ শেষ হলে এ ব্যাপারে আলাদাভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আপাতত সিটি কর্পোরেশন তা নেবে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মো. আলমগীর হিরণ বলেন, মেডিক্যাল বর্জ্য নেয়ার দায়িত্ব আমাদের না। সরকারি হাসপাতাল দুটির অন্যান্য বর্জ্য খাবারের উচ্ছিষ্টসহ অন্যান্য আবর্জনা সিটি করপোরেশনের কর্মীরা নিয়ে আসে। কিন্তু আমরা মেডিক্যাল বর্জ্য আনি না। এই দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।